আবদার ও অভিযোগ

-প্রিন্স ঠাকুর

বাবা, সকালে কি অফিসে যাবে?
আমারতো বন্ধু নেই, নেই খেলার সাথি,
মাও রোজ সকালে স্কুলে যায়
একলা ঘরে কেমন করে থাকি?

বদ্ধ ঘরে আর ভালো লাগে না
খারাপ লাগে, যাব কোথাও ঘুরতে,
কোথায় আমার সাথি পাব
এসব খেলনা নিয়ে খেলতে?

পার্কে যাব গাড়ি চড়ব
মজা হবে খেলব যত,
বন্ধু পাব ছুটব সাথে
ঘোড়ায় চড়া আনন্দ কত।

চকলেট এনো কিন্তু, বাদাম দেওয়া
ভারি মজা চিবিয়ে চিবিয়ে খেতে,
চলো যাবে, মজা হবে রিকশা নিয়ে
কিড়িং কিড়িং বেল বাজিয়ে ঘুরতে।

আমায় কত্তো কত্তো পয়সা দিও
আমার মাটির ব্যাংকে জমা রাখব,
যখন আমি অনেক বড়ো হব
তোমায় খেলনা কিনে দেব।

এখন তো বড়ো হয়েছি, এই যে দেখ
বাইক চড়তে একটুও ভয় পাই না,
ও বাবা, চলো না, চলো না বাবা
কোথাও ঘুরতে কেন যাই না!

পাইলট হব প্লেন চালাব
সবাইকে নিয়ে অনেক দূরে যাব,
ইঞ্জিনিয়ার হলে সব নষ্টগুলো
একে একে ঠিক করে দেব।

বাবা, চুপ কেন, খারাপ লাগছে
আমি ডাক্তার আমাকেতো বলো,
দেখি, দেখি―দেখি কী হয়েছে
ঔষধ দিলাম এইতো সেরে গেল।

দুপুরেতে ঘুম আসে না একলা
আমার কাছেতো কেউ নেই,
আদর সোহাগ ঠাকুমার কাছেই
ছোট্ট থেকেই বন্দি ঘরেতেই।

ঘরে আমার কত্তো খেলনা
আছে বিশাল বড়ো টিভি,
কমলা আঙুর বেদানা আপেল
সকাল-দুপুর খেতে লাগে হেভি।

জামা-জুতা সবইতো আছে
তবুও মনটা বড়ই একা,
সারাদিন পর সন্ধ্যা ও রাতে
মা ও বাবার পাই একটু দেখা।

ঘরে এসেই ব্যস্ত সবাই
সকালবেলা যেতে হবে অফিস
একলা থাকি ভালো থাকি
আমায় কোরো যেন আশিস।

১৬.০৯.২০১৯ ইংরেজি, কেরানিগঞ্জ, ঢাকা।

কাব্যগ্রন্থ : শূন্যতার ঘ্রাণ, ২০২০।

Share

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *